শিশুর মুখে কথা ফোটানো

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

শিশুর মুখে কথা ফোটানো

মুখের প্রথম বোল

বেশির ভাগ শিশুর ক্ষেত্রে প্রথম জন্মদিন উদ্যাপনের কাছাকাছি সময়ে শিশুর মুখে প্রথম শব্দ উচ্চারিত হয়, কথা ফোটে। এগুলো সাধারণভাবে পরিচিত কারও নাম, কোনো পোষা প্রাণী কিংবা বস্তু, যা তাকে টানে, আকর্ষণ করে। যেহেতু শিশু শব্দকে সরলভাবে উপস্থাপন করে ধ্বনির ওপর গুরুত্ব দেয় না, সে জন্য প্রথম দিকের বেশির ভাগ শব্দ বা কথা অবোধ্য লাগতে পারে। কিন্তু যখনই মুখে বোল ফোটা শুরু হয়ে যায়, তারা খুব দ্রুততার সঙ্গে নতুন নতুন শব্দ শিখে নেয়। দুই বছরের শিশু প্রায় ২০০ শব্দের দখল নিয়ে নেয়।

”ফেসবুক পেজ লাইক করুন”

শব্দগুলো সাজিয়ে বলা

দুই বছরের দিকে শিশু দুই বা তিনটি শব্দ জুড়ে দিয়ে কথা বলতে পারে। এই দুই-তিন শব্দ গেঁথে বেশ সহজিয়া বাক্য তৈরি করতে পারে সে। তার তখন এত বলার থাকে, সবকিছু মন ভরিয়ে আমাদের শোনাতে চায়। তবে এসব প্রাথমিক বাক্য অনেক সময় শুদ্ধভাবে বলা হয় না। তখন শিশু নিজের তৈরি কিছু শব্দ ব্যবহার করে, নিজের মতো করে কথা বলার ব্যাকরণ প্রয়োগ করে। এ পর্যায়ে মা-বাবার উচিত এসব আধো-আধো কথা মনোযোগের সঙ্গে শোনা। ভুল শোধরানোর চেষ্টা পরিহার করে তাকে বোঝার প্রচেষ্টা বেশি গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়।

মা-বাবার করণীয়

শিশুর মুখে কথা ফোটানোর বিষয়ে মা-বাবাই হলেন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক—বাকস্ফুটন কারিগর। নিচের পরামর্শমোতাবেক শিশুর মুখে বোল ফোটানো ও যথাসময়ে বাকস্ফুরণে আপনারা সাহায্য করতে পারেন:

শিশুর সঙ্গে শব্দ নিয়ে মজার খেলায় মেতে উঠুন। শিশুর মুখে এখনো প্রথম কথা ফোটেনি। তথাপি আপনি তার সঙ্গে এই মজার খেলায় মেতে উঠতে পারেন। শিশুকে পোশাক পরিয়ে দিচ্ছেন—চটজলদি তা দেখিয়ে জেনে নিন ওটার নাম কী। এভাবে চারপাশে ছিটিয়ে থাকা নানা প্রাণী ও জিনিসের নাম জিজ্ঞেস করতে পারেন। দ্বিতীয়বার নামটি বলতে অনুরোধ করুন। তবে মনে রাখবেন, যে বস্তুর সামনে সে যাচ্ছে, তাই জিজ্ঞেস করতে হবে। কেননা ওটা থেকে সরে গেলে মাত্র ১০ সেকেন্ডের ব্যবধানে সে তা ভুলে যেতে পারে।

ফেসবুক গ্রপ জয়েন করুন

নিজের সারা দিনের কাজের ধারাবর্ণনা দিন। প্রত্যেক দিনের রুটিন-কাজ করার সময় তাকে সঙ্গে রাখুন, তাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলুন, ‘এখন বাগানে যাব—চারাগাছে জল ঢালব’ ইত্যাদি। এতে করে সে দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে পরিচিত বাক্যগুলো শিখে যাবে। তবে ছোট ছোট বাক্যে কথাগুলো সাজাবেন, যাতে সে তা রপ্ত করতে পারে।

শিশুকে বোঝার মতো করে কথা শেখান। শিশুর চোখে চোখ রেখে এমন সব শব্দ বিভিন্ন কায়দায় ব্যবহার করে কথা বলুন, যাতে সে তা বুঝতে পারে।

গুরুত্বসহকারে শিশুর কথা শুনুন। অন্যের কথা কীভাবে শুনতে হয় তা নিজে উদাহরণ হয়ে শিশুকে শেখান। যদিও সে ভুল শব্দ বা বাক্য ব্যবহারে মনের ভাব প্রকাশ করছে, ভুল শোধরানোর আতিশয্য না দেখানো ভালো। বরং তার মনের কথা বুঝতে চেষ্টা করুন। যাতে সে বোঝে, তাকে মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে।

ছবির বই দেখিয়ে পড়ান। এতে শিশু উৎসাহিত হবে। নতুন নাম জানতে পারবে। ছবিতে কী কী ঘটছে, কাকে কাকে দেখা যাচ্ছে, এভাবে গল্প শোনান।

গল্প শোনান। শিশু যা যা দেখে তা নিয়ে গল্প শুনতে বেশ ভালোবাসে। আর সেসব গল্পে যদি ছড়া, ছন্দ, তাল থাকে তবে তো কথাই নেই। সে ওতে দারুণ মজে যায়।

প্রশ্ন করুন। ছোট ছোট প্রশ্ন করুন, যাতে সে সহজে উত্তর দিতে পারে। এতে পরে প্রয়োজনমতো শব্দ ব্যবহার করে সে উত্তর সাজাতে শেখে।

শুদ্ধ করে বলার তাগিদ কম হওয়া ভালো। শিশু কথা বলার সময় সবকিছু শুদ্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা তাকে নিরুৎসাহিত করে, লজ্জায় ফেলে, সে আর কথা বলতে চায় না। বরং একই শব্দ বিভিন্ন কায়দায় ব্যবহার করে তাকে শেখানো যায়।

ভালোবাসা ঢেলে, চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। আপনার হাঁটুর ওপর ওকে চড়িয়ে বসান। চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। কিংবা গান করুন, ছড়া শোনান। বাই-বাই দিতে শেখান। এভাবে সে কথার খনি আবিষ্কারে মেতে উঠবে।

আরও পড়ুনঃ বয়ঃসন্ধিকালে কি বিষয়গুলো জানা জরুরী।

গণসচেতনায় ডিপিআরসি হসপিটাল লিমিটেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

eighteen − 16 =