পুরুষের মনে গেঁথে আছে নারীদের যৌনতা নিয়ে এমন ১০টি ভুল তথ্য

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

পুরুষের মনে গেঁথে আছে নারীদের যৌনতা নিয়ে এমন ১০টি ভুল তথ্য

কথায় বলে, মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না৷ পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় কারণেই যে এ কথার জন্ম তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু সত্যিই কি তাই? সত্যিই কি মুখ ফোটে না?

নাকি মুখ ফুটতে চাইলেও তা ফুটতে দেওয়া হয় না! বা সে কথায় কান দেওয়া হয় না৷ এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলেই জানা যাবে নারীদের যৌন ইচ্ছা সম্পর্কিত বেশ কিছু ভুল তথ্য পুরুষের মনে গেঁথে থাকে৷ কী সেগুলো?

নারীদের থেকে পুরুষরাই যৌনতা বেশি পছন্দ করে

যৌনতার ক্ষেত্রে পুরুষদের ইচ্ছেপূরণের খাতিরে নারীদের যৌনতা অবদমিত করে রাখা থেকেই এ ধারণার জন্ম৷ হয়ত নারীদের যৌনতার ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে কিংবা যৌনতার ক্ষেত্রে তাদের চেপে রাখার কারণেই এ কথার প্রচলন হয়েছে৷ যৌবনের গোড়া থেকেই তাই পুরুষরা যৌনতার দিকে ঝুঁকে থাকে বেশি৷ নারীরা যেন এ ব্যাপারে নিজেদের একটু আড়াল করেন৷ আসলে টেস্টোস্টেরন হরমোনের কারণে পুরুষের যৌনতার ইচ্ছে একটু বেশিই হয়৷ নারীরা আবেগপ্রবণ হওয়ায় যৌনতার ক্ষেত্রে তাঁদের প্রতিক্রিয়া শারীরিক হয় না সবসময়৷ কিন্তু সমীক্ষা করে দেখা গেছে, যৌনতার ইচ্ছেয় কিন্তু সত্যিই নারীরা কম যান না৷ যৌনতার ক্ষেত্রে যতটা মনে করা হয় নারীরা তার থেকেও বেশি আগ্রহী বলেই প্রমাণ পেয়েছেন সমীক্ষকরা৷

নারীদের ভাবনায় যৌনতা কম

যৌনতা তো সারাক্ষণ পুরুষদের মাথায় ঘোরে-এরকম একটা চলতি ভাবনা আছে৷ কিন্তু বিভিন্ন প্রশ্নের ভিত্তিতে নারী ও পুরুষের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, এ ধারণা সঠিক নয়৷ বরং পুরুষরা গড়পরতা যতবার যৌনতা নিয়ে চিন্তা করেন, নারীরা চিন্তা করেন তার থেকেও বেশিবার৷ সুতরাং এ ধারণা এখন থেকে বদলাতেই পারেন পুরুষরা৷

নারীরা ‘হটকে’ পর্নোগ্রাফি পছন্দ করেন না

পুরুষদের মতো নারীরাও যে পর্নোগ্রাফি পছন্দ করেন এ আর নতুন কোনো তথ্য নয়৷ কিন্তু অনেকেই মনে করেন, পুরুষরাই বোধহয় হটকে পর্নোগ্রাফি দেখেন৷ নারীদের এসব না-পছন্দ৷ কিন্তু এ ধারণা সত্যি নয়৷ বরং হোমোসেক্সুয়াল পর্ন, বা পশুদের সঙ্গে মানুষের পর্নোগ্রাফিও যে নারীদের পছন্দ তা বিভিন্ন পর্ন সাইটের সেকশনের ভিজিটর ডেটা থেকেই স্পষ্ট৷ দুনিয়ার বিখ্যাত পর্নসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে লেসবিয়ান পর্ন নারীরাই দেখেন বেশি।

Please Subscribe Us!

নারীরা মূলত মনোগ্যামি

নারীরা সঙ্গমের ক্ষেত্রে এক পুরুষেই আস্থা রাখেন৷ সমাজের দীর্ঘলালিত এ এক ধারণা৷ এখানেও খানিকটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চাপিয়ে দেওয়া ধারণা কাজ করে৷ কিন্তু ব্যাপারটা সত্যি নয়৷ মার্কিনমুলুকের সেন্সাস ব্যুরো এক সমীক্ষায় জানিয়েছিল, বেশিরভাগ নারী বিবাহ প্রথা অস্বীকার করছেন ও বাচ্চার জন্ম দিতে নারাজ৷ যৌনতার ক্ষেত্রে এক মনোগ্যামি হওয়ার প্রশ্নই তাই নেই৷ দেশভেদে এ ধারণার রদবদল হতে পারে, তবে খুব বেশি পাল্টায় না৷ তবে হ্যাঁ, একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন সব নারী করতে চান না৷ এ নিয়ে তাঁরা যে মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহী এমনটাও নয়৷ তবে এ জিনিস তাঁরা যে একদম চান না, তা ভাবলে কিন্তু ভুল হবে৷

নারীরা যৌন ভাবনা নিয়ে অপরাধবোধে ভোগে

পুরুষরা নিজেদের যৌন ভাবনা নিয়ে কোনো অপরাধবোধে ভোগে না, নারীরা ভোগে-এমন কথা শোনা যায়৷ কথাটি আংশিক সত্যি৷ সাম্প্রতিক সমীক্ষা জানাচ্ছে, পুরুষরাই নিজেদের যৌন ভাবনা নিয়ে অপরাধবোধে ভোগেন বেশি৷ নারীর ক্ষেত্রে তা হয় না৷ কেন না নারীরা নিজেদের যৌন ইচ্ছেকে খুব সহজে বশে আনতে পারেন৷ তবে যৌনতার ক্ষেত্রে তাঁদের প্রকাশ কিন্তু অন্যভাবে৷ আর তাই নিজেদের ‘সেক্সি’ দেখানোর চেষ্টা করেন নারীরা৷

Please Subscribe Us!

তিরিশের পর নারীদের যৌন আকাঙ্ক্ষা তুঙ্গে থাকে

অনেকেই শুনে থাকবেন যে তিরিশের পর নারীদের যৌন আকাঙ্ক্ষা তুঙ্গে থাকে। আর এটা চল্লিশের আগে পর্যন্ত ধারাবাহিক হয়। কিন্তু এ কথা সবার জন্যে ঠিক নয়। স্ট্যানফোর্ড হেলথ কেয়ারের ফিমেল সেক্সুয়াল মেডিসিন প্রোগ্রামের গবেষক লিয়া এস মিলহেইজার বলেন, নারীদের বিশের পর টেসস্টোটেরন হরমোনের ক্ষরণমাত্রা কমে যায়। এই হরমোন যৌন আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে। তিরিশের কোঠায় পেশাজীবন, সংসার, সন্তান ও সম্পর্কের নানা টানাপড়েনে যৌন আকাঙ্ক্ষা হ্রাস পেতে পারে।

যৌনতার সময় শুষ্কতা

মাঝে মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে শুষ্কতা চলে আসতে পারে। এর কারণ একই- টেসস্টোটেরনের মাত্রা কমে যায়। এটা হতে পারে জন্মবিকতিকরণ পিল খাওয়ার কারণে। পিল খান এমন ২৮ শতাংশ নারীর এ সমস্যা দেখা যায়। জন্মবিরতিকরণ পিল টেসস্টোটেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এক ধরনের প্রোটিন উৎপাদান করে যা টেসস্টোটেরন প্রবাহে বাধা দেয়। ফলে রক্তে এর মাত্রা কমে যায়। এসব তথ্য দেন মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব অবস্টেটরিকসের ক্লিনিক্যাল প্রফেসর অ্যালিসা ডিউয়েক। এর কারণে যৌনতার সময় শুষ্কতা অনুভব করবেন। তখন বিষয়টি উপভোগ্য মন হবে না।

সপ্তাহে দুই বা তিন বার

হয়তো ধরে নিয়েছেন, আরো বেশি উপভোগ করতে সপ্তাহে দুই বা তিন বার মিলিত হবেন। কিন্তু এ সংখ্যাটা অনেক কমেও আসতে পারে যা সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য হয়। সোশাল সাইকোলজিক্যাল অ্যান্ড পারসোনালিটি সায়েন্স-এর এক গবেষণায় বলা হয়, দম্পতিরা সপ্তাহে একবার সেক্স করাকে সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য বলে মত দিয়েছেন। আরেক গবেষণায় ৩০ হাজার মানুষের তথ্য নেওয়া হয়েছে। দেখা গেছে, সপ্তাহে দুই বার সেক্স করা মানেই যে সুখ দ্বিগুন হয়ে যাবে তা সত্য নয়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে যৌনতা যত কমিয়ে দেওয়া যায় ততই উপভোগ্য হয়ে ওঠে।

Please Subscribe Us!

অর্গাজম

বয়সের সঙ্গে নারীর চূড়ান্ত তৃপ্তিলাভ দ্রুততর হয়ে যায়। ন্যাশনাল সার্ভে অব সেক্সুয়াল হেলথ অ্যান্ড বিহেভিয়ারে এ তথ্য দেওয়া হয়। যৌনতায় নারী চূড়ান্ত তৃপ্তি আসে অর্গাজমের মাধ্যমে। বয়স যত বাড়বে এটা তত দ্রুত আসবে। এর অর্থ হলো, চর্চার মাধ্যমে তারা বুঝে ফেলেন কিভাবে অর্গাজমের দেখা মেলে। বিশের কোঠায় নারীরা যৌনতাকেই অর্গাজমের একমাত্র মাধ্যম বলে মনে করেন। আর তিরিশের কোঠায় উপলব্ধি করে কিভাবে স্পর্শ এবং চিন্তার সমন্বয়ে কাজটি করা যায়।

শীৎকার

নারীর অরগাজমের সাথে সশব্দ যৌনতার একটা ভূমিকা আছে বৈকি। নারীর অরগাজমের মুহূর্তে শীৎকার একটা বাড়তি ভালো লাগা তৈরি করে, তাই অনেক নারীই এই সময়ে আওয়াজ করতে ভালোবাসেন। অন্যদিকে ৬৬% নারী জানান যে তারা আওয়াজ করেন সঙ্গীর ভালো লাগা তরান্বিত করতে, সঙ্গীর আনন্দ আরও বৃদ্ধি করতে। ৮৭% নারী এও জানান যে তারা আওয়াজ করেন নিজেরই আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য! এছাড়াও, নারীর সশব্দ যৌনতার পেছনে অন্যান্য কারণগুলি হচ্ছে- একঘেয়েমি কাটানোর চেষ্টা, ব্যথা কিংবা ভালো না লাগার অনুভূতি লুকোনোর চেষ্টা করা ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

eight + 5 =