অসহ্য গরমে আরাম পেতে কারনীয়

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

অসহ্য গরমে আরাম পেতে কারনীয়

এখন আবহাওয়াটা বেশ গরম হয়ে উঠেছে। আর এই গরমে প্রতিদিন গোসল না করে কি থাকা যায়? নিজের পরিচ্ছন্নতা ও প্রশান্তির জন্য অনেকেই দিনে দু’বারও গোসল করেন। তবে শুধু গোসল নয়, এই গরমে স্বস্তি নিয়ে আসতে পারে আরো কিছু সহজ কাজ। আসুন জেনে নেই, অসহনীয় গরম থেকে মুক্তি পাবার জন্য যে ৫ টি কাজ করা যেতে পারে।

(১) ভারি পোশাক না পড়ে হালকা কাপড় ও রঙের পোশাক পড়ুন।

(২) ত্বকের সুরক্ষায় ব্যবহার করুন বিভিন্ন ধরণের সানস্ক্রিণ।

(৩) সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যবহার করতে পারেন সানগ্লাস।

(৪) প্রচুর পানি পান করুন এবং পুষ্টিকরঙ তাজা শাক-সবজি খান।

(৫) দিনে অন্তত একবার ভালোভাবে গোসল করুন। এছাড়া বাইরে থেকে এসে ঠান্ডা পানি নিয়ে হাত-মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

ঠান্ডা পানিতে গোসলের কিছু উপকারিতাঃ

(১) পেশীর ক্ষমতা বাড়ে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঠান্ডা জলে গোসল করলে পেশীর ক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে যেকোনো ধরনের যন্ত্রণা কমে যেতেও সময় লাগে না। এই কারণেই তো শরীরচর্চার পর ঠান্ডা পানিতে গোসল করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

(২) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: প্রতিদিন পুকুরে গোসল করলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে নানাবিধ সংক্রমণের প্রকোপ একেবারে কমে যায়। এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, তীর্থস্থানে গিয়ে পুণ্য হোক বা না হোক, শরীর কিন্তু একেবারে সুস্থ হয়ে ওঠে।

(৩) ওজন হ্রাস পায়: আমাদের শরীরে দু ধরনের ফ্যাট থাকে। একটা হল ব্রাউন ফ্যাট, যা শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে। আর আরেকটি হল হোয়াইট ফ্যাট, যা শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। এই দ্বিতীয় ধরনের চর্বি গলানোর কথাই চিকিৎসকেরা সব সময় বলে থাকেন। প্রসঙ্গত, পুকুর বা নদীর ঠান্ডা জলে স্নান করার সময় ব্রাউন ফ্যাট খুব অ্যাকটিভ হয়ে যায়। ফলে একদিকে যেমন শরীরের এনার্জির ঘাটতি দূর হয়, তেমনি ক্যালোরি বার্ন হতে শুরু করে। ফলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত সাদা চর্বি ঝড়ে গিয়ে দেহ মেদমুক্ত হয়ে ওঠে।

(৪) ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে: ঠান্ডা পানিতে ডুবকি লাগানোর সময় আমরা শ্বাস বন্ধ করে জলের তলায় যাই। যে মুহূর্তে শ্বাস ফুরিয়ে যায়, অমনি হাপুস হুপুস করে অক্সিজেন টেনে নেওয়ার প্রচেষ্টায় লেগে পরি। এমনটা করার সময় আমাদের ফসুফুসের কর্মক্ষমতা মারাত্মক বেড়ে যায়। তাহলে একবার ভাবুন, যারা রোজ গঙ্গা স্নান করছেন অথবা যাদের পুকুরে স্নান করার অভ্যাস রয়েছে, তাদের ফুসফুস কতটা কর্মক্ষম!

(৫) প্রতিটি অঙ্গের ক্ষমতা বাড়ে: শরীর, ঠান্ডা জলের সংস্পর্শে আসা মাত্র লিম্প ভেসেলগুলি সংকুচিত হতে শুরু করে। ফলে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়। এমনটা যখনই হয়, তখনই প্রতিটি অঙ্গে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যাওয়ার কারণে সার্বিকভাবে দেহের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

(৬) কোনো ধরনের লাং-এর রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে: পুকুর বা নদীতে ডুব দেওয়ার সময় আমরা প্রথমে শ্বাস আটকে নি। যতক্ষণ জলের তলায় থাকি, ততক্ষণ শ্বাস আটকে রাখার পর যখন আর সম্ভব হয় না, তখন পানির উপরে উঠে আসি। এমনটা বারে বারে করার ফলে ফুসফুসের দারুন ব্যায়াম হয়ে যায়। ফলে ধীরে ধীরে লাং-এর কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।

(৭) শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যায়: ঠান্ডা জলে সকাল সকাল ডুবকি লাগালে শরীর থেকে বেশ কিছু ক্ষতিকর অ্যাসিড বেরিয়ে যায়। ফলে পেশিতে কোনও চোট থাকলে তা দ্রুত সেরে উঠতে শুরু করে।

(৮) শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ে: ঠান্ডা জলে স্নান করার সময় আমাদের শরীর থেকে এন্ডোরফিন এবং নোরাড্রেনালিন নামে দুটি কেমিকেলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই দুটি কেমিকেল শরীর থেকে যত বেরিয়ে যেতে থাকে, তত আমাদের ক্লান্তি দূর হয়। সেই সঙ্গে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

(৯) চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: সকাল সকাল পুকুর বা নদীর ঠান্ডা জলে স্নান করলে ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। আসলে ত্বক এবং চুলের অন্দরে থাকা প্রকৃতিক তেল যাতে বেশি মাত্রায় ক্ষরণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে ঠান্ডা জল। ফলে ত্বক বা চুল আদ্র হয়ে গিয়ে সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে।

(১০) মানসিক অবসাদকে দূরে রাখে: সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে ভোর ভোর পুকুরে বা নদীতে স্নান করলে আমাদের শরীরে বেশ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা মানসিক অবসাদ এবং স্ট্রেসকে নিমেষে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চলে আসে। তাই তো এবার থেকে যখনই মন ভাল থাকবে না, পুকুরে বা নদীতে একটু ডুবকি মেরে নেবেন, তাহলেই দেখবেন মন এবং শরীর, উভয়ই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

three × 1 =