আনারস আমাদের দেশের বিশেষ মওসুমি বা ঋতুর ফল হলেও কৃষিবিজ্ঞানের বদৌলতে সারা বছর পাওয়া যায়। সাধারণত ছায়াযুক্ত স্থানে আনারস লাগানো হয়। আনারসের ওপরের অংশে যে গাছ গজায় ওটা মাটিতে রোপণ করলেই আনারস হয়। আমাদের দেশে বিভিন্ন জাতের আনারস হয়। জলডুগি, ক্যালেন্ডার, মধুহরী, পাহাড়ী, কুইন প্রভৃতি জাতের আনারস চাষ করা হয়। আনারস সাধারণত স্বাদে টক হয়। তবে কুমিল্লা ও রাঙামাটির পাহাড়ের কুইন জাতের আনারস মিষ্টি। এতে এতটুকু টক নেই। কুইন জাতের আনারস আকারে ছোট হয়। এখন আমরা ঢাকা শহরের ভ্যানে করে কুইন আনারস বিক্রি করতে দেখি। এগুলো স্বাদে একেবারে মিষ্টি।
আনারস ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ। এতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড, যা আমাদের সর্দিজ্বর সারাতে বিশেষ কার্যকর। ইনফ্লুয়েঞ্জায় আনারস অত্যন্ত উপকারী। জ্বরের সাথে নাক দিয়ে সর্দি ঝরলে দুতিন দিন আনারস খেলে ভালো হয়ে যায়। শরীরের চর্বি বা মেদ কমাতে এবং ওজন কমাতে আনারস উপকারী। প্রতিদিন এক গ্লাস আনারসের রস খেলে পেটের চর্বি কমে।
বিশেষজ্ঞেদের পরামর্শ মোতাবেক আনারস ব্যবহার করলে মুত্রকৃচ্ছে, কৃমিরোগে, অপুষ্টিজনিত কৃশতায়, সর্দিগর্মির কাসিতে, পেট ফাপায় এবং রুচি আনতে উপকারী।
তবে একটা বিষয়ে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বনে করা জরুরি। দুধের সাথে আনারস খেলে বিষক্রিয়া হয়ে যায়। এতে মৃত্যু হতে পারে। তাই আনারস খাওয়ার আগে ও পরে কোনক্রমেই দুধ বা দই খাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশের কোথাও কোথাও আনারস রেঁধে খাওয়া হয়। আনারসের সাথে নারকেলের দুধ দিয়ে এক প্রকার টক রান্না করে খাওয়া হয়। এটা বিশেষ মুখরোচক। অনেকের আনারস খেলে অজীর্ণ হয়। পাতলা পায়খানা হয়।
আনারসের পুষ্টিগুণ:
উপাদান পরিমাণ মোট খনিজ পদার্থ: ০.৩ গ্রাম, আমিষ: ১ গ্রাম, শর্করা: ৯.৩ গ্রাম, জলীয় অংশ: ৮৯.৩ গ্রাম,ক্যালসিয়াম: ১৭ গ্রাম, আয়রন: ১.২ মি. গ্রাম, ভিটামিন: ০.০৫ মি. গ্রাম, ভিটামিন: ২৬ মি. গ্রাম, ভিটামিন বি১: ০.১৭ মি. গ্রাম, ভিটামিন এ: ২১৩৩ আইইউ, খাদ্যশক্তি: ৪২ কিলোক্যালরি
আনারস উৎপাদনের স্থান, জাত ও জলবায়ুর ওপর পুষ্টিমানের কিছুটা তারতম্য হয়ে থাকে।