আমরা কোভিড-১৯ এর ৩য় ধাপে প্রবেশ করে ফেলেছি। মানে সমাজে ছড়িয়ে যাচ্ছে এবার। এই ক্ষেত্রে কি হবে এবং আমাদের কি করতে হবে জানুন, মানুন এবং অন্যকেও জানান …..
৩য় ধাপ মানে- কার, কিভাবে, কোথা থেকে, কার থেকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হচ্ছে তা আর খোঁজ খবর পাওয়া সম্ভব না। তাহলে এখন কি কি করতে হবে???
১) বয়স্কদের ভুলেও ঘরের বাইরে যেতে দেয়া যাবেনা।
২) যেকোনো বয়সের শারীরিকভাবে দুর্বল, ডায়াবেটিস এর রোগী, প্রেসার এর রোগী, কিডনি সমস্যা, লিভার সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা ইত্যাদি রোগী ভুলেও ঘরের বাইরে যেতে দেয়া যাবেনা, কারণ তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে।
৩) এক্কেবারে বিশেষ দরকারে সুস্থ সবল যুবক/যুবতী যদি বের হতেই হয় তবে কম করে গড়ে ৩ মিটার, দুরত্ব (পরিসীমা ১.৫ থেকে ৫ মিটার) বজায় রাখতেই হবে যেকোনো বাইরের জানা/অজানা লোকের সাথে। ভীর/ লোক জমায়েতে যাওয়ার তো প্রশ্নই উঠেনা।
৪) সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করতে হবে যদি বাজার করার সময় ৩ মিটার (কম করে ১.৫ মিটার) এর কম দূরত্বে কারো সাথে কথা বলার প্রয়োজন পরে আর এন-৯৫/এন-৯৯/পি-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করতে হবে যদি হাসপাতালে কোনো কাজ থাকে অথবা বাড়িতে সন্দেহজনক কেউ থাকে। বাইরে রাস্তা ঘাটে কোনো লোকজন না থাকলে/ ৩ মিটার দূরত্বের মধ্যে কোনো লোকজন না থাকলে মাস্ক না ব্যবহার করলেও চলবে।
৫) বাজারে থাকাকালীন/বাজার থেকে এসে নিজের নাক, মুখ, চোখ এমন কি কানেও হাত দেয়া যাবেনা যতক্ষণ না ডেটল, সেভলন ইত্যাদি হ্যান্ড ওয়াশ/ সাবান দিয়ে ১ মিনিট ভালোভাবে ঘষে হাত ধোয়া না হচ্ছে।
৬) হাতধোয়া শেষ হলে বাজারে ব্যবহৃত জামা-কাপড় ডিটার্জেন্ট গোলা পানিতে কম করে ১/২ ঘন্টা ভিজিয়ে তারপর ধুতে হবে এবং গোসল করতে হবে।
৭) ঘরের মধ্যে কোনো কোভিড-১৯ রোগী/ সন্দেহজনক কেউ না থাকলে মাস্ক ব্যবহার এর প্রয়োজন নেই।
৮) গরম চা, গরম কফি, গরম পানি ১/২ ঘন্টা অন্তর খেতে পারলে ভালো। গলার মধ্যে কিছু জমে আছে এমন মনে হলে গরম পানি এবং লবণ অথবা ব্যাটাডাইন জাতীয় গার্গল ব্যবহার করা দরকার।
৯) ভালোভাবে ধুয়ে ভিটামিন-সি যুক্ত ফল বেশী খেলে ভালো। ফলগুলো আধ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর খাবেন। বাইরে থেকে আনা বিস্কুট, কেক ইত্যাদির যেকোনো প্যাকেট ব্যবহার এর আগে ধুয়ে নিতে হবে।
১০) ঘরের ভিতরে ঝাড়ু দেয়া যাবেনা। বরং সরাসরি লাইজল জাতীয় ফ্লোর ক্লিনার দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। কোনোভাবেই ধুলো উড়তে দেয়া যাবে না।
১১) বাজারে / বাইরে ব্যবহৃত জুতা ঘরের বাইরেই রাখতে হবে।
১২) বাইরের যেকোনো ব্যক্তিকেই কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী ভাবুন এবং সেই মতো নিজেকে সচেতন রাখুন। (যেহেতু ধাপ-৩ এ প্রবেশ করেছি।)
১৩) খবরের কাগজ, পার্সেল, কাজের লোক, বাইরের যেকোনো লোক ঘরে আসতে চাইলে সরাসরি না বলুন। কোনো খরব জানতে অনলাইনে জানুন।
১৪) শুধুমাত্র ঘরে রান্না করা খাবার খান।
১৫) দয়া করে কোনো খাবার অপচয় বা নষ্ট করবেন না। বাসায় বাজার/তরিতরকারি যা আছে সেগুলো প্রোপার ইউটিলাইজ করার চেষ্টা করুন।
১৬) ঠান্ডা খাবার/পানীয় সম্পূর্ণভাবে বর্জন করুন।
১৭) ঘর থেকে একদম না বের হওয়া হল সর্বোত্তম.
বিঃদ্রঃ এই সময়ে ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, গলা ব্যাথা, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি জাতীয় সমস্যা হলে রাস্তার পাশের ফার্মেসিওয়ালা/কোয়াকদের কাছ থেকে দেয়া কোনো ঔষধ সেবন করবেন না (কারণ তাদের ম্যাক্সিমাম প্রেসক্রিপশনেই এন্টিবায়োটিক/ব্যাথার ঔষধ থাকে যা কিনা খেলে এখন হিতে বিপরীত হতে পারে)। উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো হলে নিকটস্থ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে রক্ষা করুন।
ডা: মো: রহমতউল্যাহ (শুভ)
এম,বি,বি,এস (চায়না)
ইন্টার্ণ চিকিৎসক নোয়াখালী সদর, হাসপাতাল।
মেডিকেলবিডি/এএনবি/ ০৬ এপ্রিল, ২০২০