পারকিনসন্স ডিজিজ কি ও চিকিৎসা পদ্ধতি?

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

পারকিনসন্স ডিজিজ মানুষের মস্তিষ্কের প্রাণঘাতী রোগের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে এ রোগের আক্রান্তদের মেডিসিনের পাশাপাশি সার্জারি চিকিৎসাও শুরু হয়েছে। এটি একটি মারাত্বক প্রাণনাশক রোগ হওয়ার এই রোগ সম্পর্কে জানা জরুরি।  আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জেনে নিব এই রোগ কি এবং কিভাবে বুঝবেন আপনি এই রোগে ভুগছেন কি না  এবং এর চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো কিকি? চলুন প্রথমেই জেনে নিই এই রোগের লক্ষণগুলো কি কি।

পারকিনসন্স ডিজিজের লক্ষণ

  • পারকিনসন্স রোগের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা কিছু সুনির্দষ্টি লক্ষণ বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে: সামনে ঝুঁকে হাঁটা
  • ভাবলেশহীন মুখ
  • হাত শক্ত হয়ে যাওয়া
  • হাঁটার সময় হাত কম দোলায়মান
  • হাত কাঁপুনি
  • ধীরগতি
  • পা কাঁপুনি (এক কথায় এটিকে নিয়ন্ত্রণহীন হাত-পা কাঁপা বা খিঁচুনি হিসেবেও উল্লেখ করেছেন)

শিকাগোর রাশ ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের নিউরোলজিস্ট ড. দেবোরাহ হল বলেন, শিক্ষকের ব্লাকবোর্ডে লেখা যদি ছাত্রদের বুঝতে কষ্ট হয় এবং বাক্য যদি জড়িয়ে লেখা হয়, এমন অবস্থা পারকিনসন্স ডিজিজের প্রাথমিক লক্ষণ। নাশিকা রন্ধে যদি ঘ্রাণ শক্তি হ্রাস পায় অর্থাৎ আপনি যদি খাবার বা ফুলের ঘ্রাণ কম অনুভব করেন তাহলে বুঝতে হবে এটা একটি পারকিনসন্স লক্ষণ। এ রোগে প্রথম থেকে চিকিৎসা না নিলে এক সময় চলাফেরার শক্তি থাকে না। এমনকি ঢোক গিলার ও খাবার খাওয়ার ক্ষমতা পর্যন্ত হারিয়ে ফেলে রোগী।

চিকিৎসা

পৃথিবীতে পারকিনসন্স ডিজিজের মেডিসিন ও সার্জিক্যাল- দুই ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থাই বর্তমানে চালু রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে কেবল মেডিসিন চিকিৎসা ব্যবস্থাই চালু, সার্জিক্যাল চিকিৎসার তেমন প্রসার এখনো  ঘটেনি। প্রাণঘাতী এ রোগ শরীরের স্বাভাবিক নড়াচড়ার ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত করে। চলাফেরার ওপরও নিয়ন্ত্রণ কমে যায় ধীরে ধীরে। হাত-পা প্রচণ্ড রকম কাঁপতে থাকায় এসব রোগী হাঁটা-চলা করতে পারে না। এর কোনো নিরাময় নেই, কেবল লক্ষণভিত্তিক নিয়ন্ত্রণের চিকিৎসা রয়েছে। এ চিকিৎসা পদ্ধতিকে ‘ডিপ ব্রেইন স্টিম্যুলেশন’।  রোগীর মস্তিষ্কের প্রায় ৮ সেন্টিমিটার গভীরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে  ওই নির্দিষ্ট কোষে একটি বৈদ্যুতিক তার স্থাপন করা হয়।

আক্রান্ত ব্যক্তির বুকের চামড়ার নিচে বসানো পেসমেকারের (এক প্রকার ব্যাটারি, যা হৃদ্‌রোগেও ব্যবহৃত হয়) সঙ্গে ওই তারের সংযোগও থাকে। মস্তিষ্কে স্থাপিত ধাতব তার কোষগুলোতে প্রতি সেকেন্ডে ১৫০ পালস বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়। এতে ওই কোষের স্নায়ু অবশ হয়ে যায়। ফলে কাঁপুনি বন্ধ হয়ে যায়। এই চিকিৎসা পারকিনসন রোগ ভালো করে না। কিন্তু রোগের উপসর্গগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক জীবনযাপনে সাহায্য করে, এতে করে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্তত স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে। পারকিনসন্স রোগ চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। তবে অ্যাডভান্সড স্টেজে গেলে ওষুধ আর কাজ করে না। তখন সার্জারির প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশেও পারকিনসন্স রোগের সার্জারি শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

18 − seventeen =