আলঝিমার্স রোগ

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

আলঝিমার্স রোগ

আলঝিমার্স বার্ধক্যের একটি রোগের নাম। বেশির ভাগ লোক যাদের বয়স সত্তরের উর্ধ্বে, তারাই এ রোগের শিকার হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি হঠাৎ সব কিছু ভুলে যায়। অনেক সময় নিজের না ও ঠিকানা ভুলে যায়। আপনজন- যেমন স্ত্রী, পুত্র, কন্যা- নাতি- নাতনীদের চিনতে পারে না। কথা বলার সময় হঠাৎ থেমে যায় উপযুক্ত শব্দের অভাবে। অর্থ্যাৎ শব্দ মনে আসে না, যা দ্বারা সে তার বক্তব্য প্রকাশ করতে পারে। লেখার বেলায়ও এমন হয়। শব্দের অভাবে বাক্য সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয় না।
একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, যিনি সারা জীবন হিসাবা ও গণনার কাজ করেছেন, তিনি তার বার্ধক্যে পৌঁছে এমন গণনার সম্মুখীন হন, যা একটি স্কুলের ছাত্র সহজে সমাধান করতে সক্ষম। এসবই ওই বার্ধক্যের সমস্যা।

অনেক ক্ষেত্রে এমন অবস্থায় রোগী কোনো নিউরোলজিস্টের শরণাপন্ন হয়। তিনি বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং কিছু ওষুধপত্রের নাম লিখে দেন। সেগুলো ব্যবহার করলে এই অবস্থা হ্রাস পায়। তবে এটা বয়সের রোগ। সম্পূর্ণ চিকিৎসা হয় না। তারা প্রথমে এভাবে পরীক্ষা করেন রোগীকে- ‘আচ্ছা, বলেন তো ক্যারোট দেখতে কেমন? গোল আলুর মতো, নাকি টমেটোর মতো? দুই, চারটি পাখির নাম বলুন তো, যেসব নামের প্রথম অক্ষর ‘শ’। তিন, বলুন তো বিশ টাকা ভাংতি করলে কয়টি পাঁচ টাকার নোট পাওয়া যাবে? চা. ঘড়ি দেখিয়ে প্রশ্ন করা হয়, বলুন তো কয়টা বাজে? রোগী সঠিক উত্তর দিলে বুঝতে হবে, এটা তার নিউরো সমস্যা নয়, অন্য কোন সমস্যা। যেমন- মস্তিষ্কের টিউমার, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক অথবা কোনো সমস্যা আছে। আর যদি ওইসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে সক্ষম হয়, তবে মস্তিষ্কের সমস্যা বুঝতে হবে। তখন চিকিৎসক সেভাবে ব্যবস্থা দেবেন।
ভিটামিনের অভাব বা ঘাটতি, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের জন্যও এমন অবস্থা হতে পারে। রোগী মাঝে মাঝে বিনা কারণে রেগে যায়। অনাকাঙ্খিত আচরণ করে। কোনো প্রশ্ন করলে অন্য কাউকে দেখিয়ে দেয়। এগুলো মস্তিষ্কের রোগ বা সমস্যা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রেগান এই রোগে মারা যান।

এই রোগ কমানো যায়, কিন্তু পুরো চিকিৎসা হয় না বলে নিউরোবিশেষজ্ঞরা বলেন। তারা বলেন, উচ্চ রক্তচাপ, ডিপ্রেশন ইত্যাদি থেকেও হতে পারে। তাই নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করা, হৃদরোগের অবস্থা থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, রক্তের শর্করা পরীক্ষা করে নিয়ন্ত্রণ করা, দাবা লুডুর মতো মস্তিষ্ক চালনার খেলাধুলা করা এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান ইত্যাদি বেশ উন্নতি হয়। তবে এই রোগে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের সাহায্য বা পরামর্শ নিলে অবস্থার অবনতি ঘটে না। তাই এই সমস্যার শুরুতে কোনো বিশেষজ্ঞ নিউরোলজিস্টের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা ভাল।

আরও পড়ুনঃ বয়স হলে স্মৃতি কি হারিয়ে যায়?

গণ সচেতনতায় ডিপিআরসি হসপিটাল লিমিটেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

5 × 3 =