মেরুদন্ড ব্যথার মূল কারণ ও চিকিৎসা

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

মেরুদন্ড ব্যথার মুল কারন ও চিকিৎসা

পৃথিবীতে এমন কোন পুরুষ বা মহিলা নেই যে, জীবনের কোন না কোন সময় মেরুদন্ড ব্যথায় ভোগেন নাই। আর বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে শীরদাড়া বা মেরুদন্ড সমস্যার বেশীর ভাগ কারন ম্যাকানিকেল। আর ডিস্ক প্রলাম্প এর অবস্থান তৃতীয়, কিন্তু বর্তমানে এই সমস্যা দিন দিন এতই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের রীতিমত ভাবিয়ে তুলছে। ডিস্ক হচ্ছে মেরুদন্ডের দুই কশেরুকার মধ্যর্বতী কার্টিলেজ জাতীয় এক প্রকার রাবারের মত পদার্থ। যা মেরুদন্ডের এক হাড়কে অপর হাড় থেকে বিভক্ত রাখে। যাতে, একটি হাড় আরেকটির সঙ্গে র্ঘষন না লাগে এবং শরীরের ওজন বা শক এবজরভার হিসাবে কাজ করে।

ডিস্কের ভেতরের অংশ নিউক্লিয়াস পালপোসাস যা জেলির মতো নরম এবং বাইরের অংশ থাকে অ্যানুলাস ফাইব্রোসাস। আঘাত পেলে, উচু স্থানে থেকে পড়ে গেলে, মেরুদন্ডের লিগামেন্ট বা মাংস পেশি দুর্বল হয়ে গেলে, ভূল ভাবে ভারি জিনিস তুলতে গেলে, অত্যধিক পরিশ্রম করলে বা সারাক্ষন শুয়ে বসে থাকলে। দীর্ঘক্ষন নীচু স্থানে পিড়ী, মোড়া বা মাটিতে বসে থাকলে, মেরুদন্ডের ভূল অবস্থান, পুষ্টির অভাবে তাছাড়া আরো নানাবিধ কারনে ডিস্ক প্রলাম্প হতে পারে। আমাদের দৈনদিন প্র্যাকটিসে সারভাইকেল চার/পাঁচ, পাঁচ/ছয় এবং লাম্বার চার/পাঁচ, পাঁচ/ স্যাক্রাল এক মধ্যবর্তী ডিস্ক প্রলাম্প রোগী বেশী দেখা যায়।

কোমরে ডিস্ক প্রলেম্প এর লক্ষণঃ

কোমরে প্রচন্ড ব্যথা বা ভারী জিনিষ উত্তোলন করতে বা হাচি বা কাশি দিতে কোমরে বা পায়ে ব্যথা অনুভূব অথবা পায়ে টান লাগা। কোমরে ঝিন ঝিন, শীন শীন, ঝালাপোড়া বা অবশ অবশ ভাব, এক জায়গায় অনেক ক্ষন বসলে পুরো কোমরে বা শীরদাড়া আস্তে আস্তে ব্যথা বেড়ে যাওয়া। চলাফেরা বা হাটা হাটিতে ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়া, শুয়ে থাকলেও ব্যথা অনুভব হওয়া । কিছু কিছু রোগীর কোমর একদিকে বেকে যাওয়া। এভাবে চলতে চলতে ব্যথা কোমরে অনুভুত না হয়ে শুধু পায়ের মাংসে বা শীরদাড়ায় কামড়ানো জাতীয় ব্যথা হওয়া। অনেক সময় কোমর ব্যথার পাশাপাশি প্রশাব বা পায়খানার অনুভূতি না থাকা বা সমস্যা হওয়া, পায়ের মাংশ পেশী শুকিয়ে যাওয়া বা এক পা বা দুই পা প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়া।

ঘাড়ের ডিস্ক প্রলেপসের লক্ষনঃ

ঘাড়ে ব্যথা হওয়া, ঘাড় নাড়াতে ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়া। ঘাড় একদিকে বেকে যাওয়া, ঘাড় হতে এক হাতে বা দুই হাতে ব্যথা উঠানামা করা। হাতে শীণ শীন , ঝালা পোড়া বা কন কন জাতীয় তীব্র ব্যথা বা অনেক সময় হাত অবশ ভাব বা ভারী ভারী লাগা, আস্তে আস্তে হাতের কর্ম ক্ষমতা কমে আসা। হাত নীচুতে ঝুলিয়ে রাখতে অসুবিধা হওয়া এবং হাতের মাংশ পেশী শুকিয়ে যাওয়া।

সর্তকতাঃ

ডিস্ক প্রলেস্প হলে সর্ম্পূন বিশ্রামে যেতে হবে। দৈনন্দিন চলাফেরা, কাজ কর্ম বন্ধ রাখতে হবে। বোঝা বহন নিষিদ্ধ এবং সাধারন শারীরিক ব্যায়াম অবশ্যই বন্ধ থাকবে। কাজ কর্ম বা চলাফেরা করলে সমস্যা জটিল হয়ে যেতে পারে। অবশ্যই নরম খাবার খেতে হবে যাতে কোষ্ঠ কাঠিন্য না হয়।

রোগ নির্ণয়ঃ

কাহারো এ জাতীয় সমস্যা দেখা দিলে দেরী না করে বিশেবজ্ঞ চিকিৎসকের শরেনাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক রোগীকে শারীরিক ভাবে পর্যবেক্ষন করে রোগ নির্ণয় করবেন এবং প্রয়োজন হলে বিভিন্ন প্যাথলজীকেল পরীক্ষা এবং এম আর আই করলে ও রোগ নির্ণয় করা যায়। তার জন্য অবশ্যই বিশেষেজ্ঞ চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।

চিকিৎসাঃ

গবেষনায় দেখা গেছে বেশির ভাগ ডিস্ক প্রলাম্প রোগী অপারেশন না করে ম্যানুয়াল থেরাপি, ইন্টারফেরেনশিয়াল থেরাপি, ম্যানুপুলেশন থেরাপি, অটো ট্রাকশন ট্রইথ ডিকম্প্রেশন থেরাপি নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এতে করে অপারেশনের জটিলতা থেকে মুক্ত থাকা যায়। তার জন্য রোগীকে অবশ্যই কোন বিশেষায়ীত হাসপাতালে আনুমানিক ২-৪ সপ্তাহ ভর্তি থাকতে হবে। চিকিৎসা চলাকালিন সময়ে কোন প্রকার মুভমেন্ট করা যাবে না। চিকিৎসা শেষে রোগীকে একটানা ৩ মাস নির্দেশিত এক্সারসাইজ প্রত্যহ ২/৩ বেলা চালিয়ে যেতে হবে। পসচারাল এডুকেশন শিখে নিয়ে মেনে চলতে হবে।

ডা. মো: সফিউল্যাহ্ প্রধান

পেইন প্যারালাইসিস ও রিহেব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ
যোগাযোগ:- ডিপিআরসি হাসপাতাল লি: (১২/১ রিং-রোড, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭)
শ্যামলী ক্লাব মাঠ সমবায় বাজারের উল্টো দিকে
সিরিয়ালের জন্য ফোন: ০১৯৯-৭৭০২০০১-২ অথবা ০৯ ৬৬৬ ৭৭ ৪৪ ১১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

9 + eighteen =