
জি এম মিঠন, নওগাঁ: নওগাঁয় কর্মস্থলেই এক ডাক্তারের যৌন লালসার শিকার হয়ে যৌন নিপিড়নের যন্ত্রনা সইতে না পেরে বিষ পানে আত্মহননের পথ বেছে নিলেন খাতিজা আকতার (৩০) নামের এক গৃহবধূ। গৃহবধূ খাতিজা আত্মহননের পর তার ফোন রেকর্ড থেকে যৌন নিপিড়নের বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় এবং পরবর্তীতে মামলা দায়ের এর প্রেক্ষিতে পুলিশ ধর্ষক ডাক্তার হেলাল আহম্মেদ লিটন কে গ্রেপ্তার করেছে। আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁ জেলা সদর শহরের পাটালির মোড় এলাকায়। যৌন নিপিড়নের শিকার গৃহবধূ খাতিজা শহরতলীর আরজী নওগাঁ মদ্যপাড়ার রাজমিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। ধর্ষক ডাক্তার হেলাল আহম্মেদের বাড়ী নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার কলা বাড়িয়া শিবপুর গ্রামে। তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম সরদার বলে পুলিশ সুত্রে জানাগেছে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল হাই ও খাতিজার স্বজনরা জানান, ৫ বছর আগে শহরের পাটালীর মোড়ে জনৈক শাহিন হোসেনের বাসার দুটি রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে পাইলস্ কিউর সেন্টার খোলেন ডাঃ হেলাল আহম্মেদ (ডিপিএইচ, মেডিশিন/ ডিএমএফ, ঢাকা)। এখানে গত প্রায় ৩ সপ্তাহ আগে আয়া কাম চেম্বার সহকারী হিসেবে চাকরি নেন এক সন্তানের জননী গৃহবধূ খাতিজা আকতার। গত ১৮ জানুয়ারী বিকেল ৫ টার দিকে ডাক্তার হেলাল আহম্মেদ তার চেম্বারের ভিতরে খাতিজা কে জোর পূর্বক ধর্ষন করে।
খাতিজার জা আয়েশা সিদ্দিকা সাংবাদিকদের জানান, ধর্ষনের শিকার হয়ে প্রাণ চঞ্চল খাতিজা নিরব পাথর হয়ে যান। খাতিজার হঠাৎ করে নিরব হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানার জন্য তার যা অনেক পিরাপিরি করলে সে জানায় ডাক্তার তাকে ধর্ষন করেছেন। এ লজ্জায় স্বামী, সন্তান বা অন্য কারও দিকে তাকাতে পারছে না খাতিজা। এক পর্যায়ে সে তার স্বামীর গৃহে গত ২০ জানুয়ারী বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিষ পান করলে প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে এবং পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। এই হাসপাতালে গত ২২ তারিখ মধ্য রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় খাতিজা।
খাতিজার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ময়নাতদন্ত শেষে ২২ জানুয়ারি খাতিজাকে দাফনের পর খাতিজার মোবাইল ফোনে ওই ডাক্তার একাধিকবার ফোন করেন । কিন্ত আমি ফোন ধরিনি। এসময় কৌতুহল বশত ফোন চেক করতে গিয়ে ফোনে পাওয়া যায় তাকে ধর্ষনের বর্ণনা সহ রেকর্ড। মোবাইল ফোনে খাতিজা বাড়ীওয়ালা যে বাড়িতে ডাক্তারের চেম্বার রয়েছে) সাহিন হোসেন কে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষনের বিষয় টি বর্ণনা করেন। পরে বিষয় টি নওগাঁ সদর থানায় অবহিত করলে পুলিশ খাতিজার বাবাকে বাদি করে এ বিষয়ে একটি মামলা নিয়ে শুক্রবার ডাক্তার হেলাল আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করেন।
এব্যাপারে খাতিজার বাবা বলেন, ওই ডাক্তার আমার ৫ বছর বয়সী নাতনী জামিয়া খাতুনকে মা হারা করেছে আর আমি হয়েছি মেয়ে হারা। আমি ঐ ধর্ষক ডাক্তারের উপযুক্ত শাস্তি চাই। একইকথা বলেন, খাতিজার মা সাহানাজ খাতুন। নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল হাই বলেন, মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ শুক্রবার ভোরে ডাঃ হেলাল আহমেদকে তার পাটালীর মোড়ের চেম্বার থেকে গ্রেফতার করেছে এবং ইতি মধ্যেই পুলিশের জিঙ্গাসাবাদে খাতিজাকে ধর্ষনের কথা স্বীকার করেছেন ডাঃ হেলাল আহম্মেদ। খাতিজার স্বজনরা ডাক্তার হেলাল আহম্মেদের শাস্তি দাবি করেছেন।
medicalbd সাস্থের সকল খবর।
