“নারী স্বাস্থ্য” নিয়ে প্রচলিত ৫টি মারাত্বক ভুল ধারণা!!

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

নারী স্বাস্থ্য নিয়ে প্রাত্যহিক জীবনে এমন অনেক কথা আমরা শুনে থাকি আসলে যেগুলোর কোন ভিত্তি নেই বা বৈজ্ঞানিক সম্মত নয়। এই আর্টিকেলটিতে আমরা আজকে নারী স্বাস্থ্য নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা বা ভুল তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।

০১. পুরুষেরা হৃদপিণ্ডের সমস্যায় বেশি ভোগেন- নারীদের তুলনায়

হৃদপিণ্ডের সমস্যাকে অনেকে শুধু পুরুষের সমস্যা বলে ভাবেন। আসলে বাস্তবতা কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাস্তবতা হল-  হৃদপিণ্ডজনিত অসুখ পুরুষের যেমন হয়, তেমনি নারীদেরও হয়। ৪৫-৬৪ বছরের প্রতি ৯ জন নারীর মধ্যে ১ জনের হৃদপিণ্ডে সমস্যা দেখা যায়। তবে এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যদি আপনি-

  • ধূমপান না করেন
  • নিয়মত শরীরচর্চা করেন
  • স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করেন এবং
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেন

তাহলে হৃদপিণ্ডে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। সাধারণত, নারীদের হৃদপিণ্ডের সমস্যা পুরুষদের চাইতে দশ বছর পর গিয়ে ধরা পড়ে বা জন্ম নেয়। বয়স বেড়ে যাওয়ায় শরীর রোগের বিরুদ্ধে তখন অতটা লড়াইও করতে পারে না। তাই, পুরুষদের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে নারীদের হৃদপিণ্ডের সমস্যাকে একটু বেশি বিপদজনক মনে করা হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে।

আপনার স্বাস্থ্য বিষয়ক যেকোন তথ্য জানতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথেই থাকুন

০২. পিরিয়ডকালীন সময়ে সন্তান ধারণ সম্ভব নয়

এটা মোটেও সত্যি নয়। নারীর পিরিয়ডের চক্র এবং শারীরিক অবস্থার উপরে নির্ভর করে ডিম্বাণু তৈরি হওয়ার সময়।  শুক্রাণু অনেকটা সময় কর্মক্ষম থাকেও সেটা আমরা জানি। তাই পিরিয়ড হোক বা না হোক, ফলাফলটা এক্ষেত্রে ঠিক মাসের অন্য যেকোনো দিনের মতোই হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তাই বলা ‘পিরিয়ডকালীন সময়ে সন্তান ধারণ সম্ভব নয়’ এই ধারণা পুরোপুরি ভুল।

০৩. কিডনিতে পাথর হয় না

নারীদের কিডনিতে কখনো পাথর জমে না এটাও একটি প্রচলিত ধারণা আমাদের সমাজে। কিন্তু আসলে কি তাই? না বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।নারীদেরও কিডনীতে পাথর হয় এবং সেটা বেশ কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় বিশেষ করে নারীদের জন্য। সাধারণত ৪০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের কিডনিতে পাথর দেখা যায়। আর এটা তাদের ক্ষেত্রে ঘটেও বেশি। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায় ৫০ বছরের পর। অবশ্য, তাঁর মানে এই নয় যে, নারীরা এর আগে কিডনির পাথরের সমস্যায় ভুগতে পারেন না। এই সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন।

হেলথ টিপস পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

০৪. অন্তর্বাস পরিধান

অর্ন্তবাস পরিধান করলেই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে মেয়েদের এ এরকম ধারণা আছে অনেকের মধ্যেই। অনেকেই মনে করেন যে, অন্তর্বাস বিশেষ করে ধাতব অন্তর্বাস পরিধান করলে নারীদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে কারণ হিসেবে মনে করা হয়, অন্তর্বাস শরীরের রক্ত চলাচলে বাঁধা দেয়। ফলে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি হয় শরীরের মধ্যে। সেখান থেকে জন্ম নেয় ক্যান্সার। কিন্তু বাস্তবতা হল, রক্ত শরীরের উপরের দিকে যাতায়াত করে। অন্তর্বাস এক্ষেত্রে কোন সমস্যা তৈরি করে না। সেটা যদি করে থাকে, তবুও এতে করে আপনার ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ততটা বাড়বে না, যতটা আপনার নিজের স্বাস্থ্য, পরিবারের ইতিহাস, সন্তানের জন্ম- ইত্যাদির জন্য বাড়বে। তাই এই কুসংস্কার বা ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

০৫. শুধুমাত্র সকালেই মর্নিং সিকনেস হয়

সাধারণত নারীদের গর্ভধারণ করার পর নারীদের মধ্যে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মর্নিং সিকনেস দেখা দেয়। কিন্তু তার মানে এই না যে, মর্নিং সিকনেস শুধু সকালেই হয়। এটি দিনের যেকোনো সময়েই হতে পারে যা বহু প্রমাণিত। তাই যে যা বলছে সেটা বিশ্বাস না করে ভালো করে যাচাই বাছাই করুন। যৌক্তিকতা ছাড়া কথার কোন মূল্য হয় না। আর অবশ্যই এইসব কুসংস্কার থেকে দূরে থাকুন, সুস্থ থাকুন- সুন্দর থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

nine − 2 =