অতিরিক্ত স্রাদা-স্রাব এবং দুর্গন্ধ যুক্ত সাদা-স্রাবকে লিউকরিয়া বলে। এই লিউকরিয়া বা স্রাদাস্রাব সাধারণত প্রতিরোধের জন্য জরায়ুর মুখ সবসময় পরিষ্কার এবং শুকনো রাখা জরুরি। ভাজাপোড়া খাওয়া বন্ধ করলে্ এতে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আর মাসিকের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ৫ ঘণ্টা অন্তর অন্তর পাল্টানো জরুরি। সাদাস্রাব মেয়েদের জন্য খুবই সাধারণ একটি বিষয়, এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু অতিরিক্ত এবং দুর্গন্ধ যুক্ত সাদাস্রাব খুব বিব্রতকর এবং জরায়ুর মুখে ইনফেকশন হওয়ার জন্য। সাদাস্রাব হল যখন নারীর জরায়ু থেকে ঘন সাদা অথবা হলুদ রঙ এর স্রাব নিগ্রত হয় সেটা। সাদাস্রাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যৌন স্বাস্থ্যের সমতা রক্ষা করার জন্যই এটা জরুরি। সাধারণত ১৩-১৯ বছরের মেয়েদের, সদ্য জন্ম নেওয়া মেয়ে শিশুর(এস্ট্রজেন হরমোন এর জন্য), প্রেগনেন্সির সময় স্বাভাবিক সাদাস্রাব হয়। অতিরিক্ত মাত্রায় সাদাস্রাব অনেক কারনেই হতে পারে।
সাদাস্রাব এর কারণ
- জরায়ুতে ব্যাকটেরিয়া জন্মালে
- জরায়ু সব সময় ভেজা থাকলে তাড়াতাড়ি ব্যাকটেরিয়া বাসা বাধতে পারে
- ছোঁয়াচে যৌন রোগ
- ইস্ট এর সংক্রামন ঘটলে
সাদাস্রাব এর লক্ষণ
- গন্ধ যুক্ত সাদাস্রান নিঃসরণ
- অতিরিক্ত সাদা স্রাব-এ কোমরে ব্যথা করে
- শরীর দুর্বল লাগা
- আন্ডার ওয়্যার এ দাগ লেগে থাকা
- তলপেট ভারি হয়ে থাকা
- বদ হজম
- মুখের মলিনতা নষ্ট হয়ে যাওয়া
- জরায়ুতে চুলকানি অথবা জ্বালাপোড়া
- চোখের নিচ গর্ত হয়ে যাওয়া, চোখের নিচ কালো হয়ে যাওয়া
প্রতিরোধে করণীয়গুলো
- জরায়ুর মুখ সবসময় পরিষ্কার এবং শুকনো রাখতে হবে। মনে রাখবেন, জরায়ুর মুখ ভেজা থাকলে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
- কখনও অনেক সময়ের জন্য খালি পেটে থাকবেন না।
- স্যানিটারি ন্যাপকিন ৫ ঘণ্টা পর পর বদলানোর চেষ্টা করবেন।
- বেশি পরিমাণে জরায়ু চুলকালে কুসুম গরম পানিতে লবন দিয়ে, জরায়ুর মুখ ভালো করে ধুতে হবে।
ডায়েট
- প্রতিদিন ২ চামচ টক দই খান।
- ভাজাপোড়া খাওয়া একদমই বাদ দিতে হবে।
- অ্যালার্জি যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
ঘরোয়া পদ্ধতি
- নরীদের এলাচি দানা জন্য খুব উপকারি। প্রতিদিন এলাচি খেলে শরীরে হরমোনের সমতা থাকে। সাদাস্রাব এর জন্য প্রতিদিন রাতে একটি গ্লাসে ৪/৫ টা এলাচি দানা দিয়ে রাখবেন। সকালে উঠে পানিটা খেয়ে ফেলবেন ।
- জরায়ুর মুখ ধোয়ার সময় ৫ চামচ ভিনেগার অথবা অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার এবং ১ চামচ লবন পানিতে মিশিয়ে ধুবেন, আরাম পাবেন।
- প্রতিদিন ১/২ কোয়া রসুন খেলে সাদাস্রাব ধীরে ধীরে কমবে।
- আধা চামচ বেকিং সোডা পানিতে গুলিয়ে জরায়ুর মুখ ভালোভাবে ধুলে সাদাস্রাব কমবে।
- উপরোক্ত বিষয়গুলো মনে রাখলে এবং ভালোভাবে মেনে চললে সাদাস্রাব অনেকাংশেই লাঘব হবে এবং সুস্থ থাকবেন ইনশাআল্লাহ। আর যদি খুব বেশি পরিমাণে সাদাস্রাব হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না।