পেয়ারার পুষ্টি ও ঔষধি গুণ
প্রত্যেক ফলেরই কিছু না কিছু উপকারিতা রয়েছে। তেমনি পেয়ারারও রয়েছে প্রচুর উপকারিতা। যা অন্যান্য ফল থেকে একটু বেশিই বলা যায়। আমরা সাধারণত সবুজ ও লাল পেয়ারা দেখে থাকি। কিন্তু এছাড়াও প্রায় ১০০ টির বেশি প্রজাতির পেয়ারা রয়েছে। একটি পেয়ারার খাদ্য গুণ কমলার ৪ গুণ বেশি। পেয়ারার মধ্যে যেসকল খাদ্য গুণ রয়েছে তা হলো পানি, শক্তি, প্রোটিন, আশ, ফসফরাস, সোডিয়াম, ভিটামিন, ম্যাঙ্গানিজ, সেলিনিয়াম, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩, খনিজ, সেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। পেয়ারা ফলই শুধু উপকারী তা নয় পেয়ারা পাতায়ও অনেক গুণ রয়েছে। পেয়ারা পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধী, সংক্রমণ রোধ করে। এছাড়া প্রদাহ, ব্যথা, জ্বর, বহুমূত্র, আমাশয় প্রভৃতি রোগে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখা যেতে পারে। সাধারণ এবং সহজলভ্য এই ফলটির পুষ্টিগুণ অনেক। এতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ‘সি’ ও লাইকোপেন—যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারি। পেয়ারার বিশেষ পাঁচটি গুণের মধ্যে রয়েছে, এটি ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চোখের জন্য ভালো, পেটের জন্য উপকারী আর ক্যানসার প্রতিরোধী। আজ আমরা জেনে নিই পেয়ারার পুষ্টি ও ঔষধি গুণ –
পেয়ারার পুষ্টি ও ঔষধি গুণ:
- দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
- চোখের ছানিপড়া রোধ করে।
- হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
- গর্ভবতী নারীদের জন্যও বিশেষভাবে উপকারি।
- খাবারের রুচি বাড়াতেও খেতে পারেন পেয়ারা।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করে।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস ও ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- পেয়ারা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
- কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ নিযন্ত্রণ করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি।
- পেটের সমস্যা দূর করে।
- স্ট্রেস দূর করে।
- ত্বক ও চুলের পরিচর্যা করে।
- হার্টকে সুস্থ রাখে।
- শিশুদের নিউরোলজিক ডিজঅর্ডার নিরাময় করে।
- মস্তিকে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে।
- মুখের ভিতরের সাদা দাগ দূর করে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- মাসিকের ব্যাথা নিরাময়ে সাহায্য করে।
- বয়সের ছাপ কমায়।
- মেটাবলিজম বাড়ায়।
- বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- ডায়রিয়া রোধে সাহায্য করে।
পেয়ারার অন্যান্য পুষ্টিগুণ:
এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’পাওয়া যায়, যা কমলালেবুর চেয়েও কয়েক গুণ বেশি। পেয়ারায় আছে ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স।এতে আছে যথেষ্ট পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড ও নিকোট্রিন অ্যাসিড। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেয়ারা বেশ কাজ দেয়। এটি রক্তসঞ্চালন ঠিক রাখে এবং কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পেয়ারা খেলে উপকার পাবেন। অ্যাজমা, স্কার্ভি, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, ক্যানসার ইত্যাদি অসুখের ক্ষেত্রেও পেয়ারা বেশ উপকারী। জটিল শর্করা ও তন্তুসমৃদ্ধ পেয়ারা রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ পেয়ারা পাতার জুস গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যায় উপকারী। পেয়ারা ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং এই ফলের রস সর্দি-কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য ও আমাশয়সহ পেটের অসুখ সারাতে খুবই উপকারি। এছাড়াও বয়সের সঙ্গে জড়িত নানা রোগ যেমন: স্মৃতিভ্রংশ (আলঝেইমার), চোখে ছানি, আর্থরাইটিস বা হাঁটুব্যথা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
পেয়ারার পুষ্টি ও ঔষধি গুণ অনেক। তবে অবশ্যই খাবার আগে পেয়ারা ভালো করে ধুয়ে খেতে হবে।
মেডিকেলবিডি/আরএম/ ১ জুন, ২০২১