হৃদকম্পন বেড়ে গেলে কি করবেন।

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

হৃদকম্পন

প্যালপিটেশন বা বেশি হৃদকম্পন একটি অতি পরিচিত সমস্যা। যে কোন সয়সের লোক এই সমস্যার শিকার হতে পারেন। তবে যুবক-যুবতীদের মাধ্যে এর প্রকোপ অত্যন্ত বেশি দেখা যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় হৃদপিন্ডের ক্রিয়া অনুভূতিহীন হয়ে থাকে। যদি কোন কারণে হৃদপিন্ডের ক্রিয়ার অস্বাভাবিক অবস্থা দেখা দেয় তখন তা অনুভূতিশীল হয়ে পড়ে। তখন স্বাভাবিক হৃদপিন্ড নিয়েও অনেক এ আশংকার মধ্যে দিন কাটায়। যেমন স্বাভাবিক অবস্থায় হৃদপিন্ড প্রতি মিনিটে ৬০-৯০ বার রক্ত পাম্প করে থাকে অর্থাৎ হৃদপিন্ডের নাড়ির গতি মিনিটে ৬০-৯০ বার রকত্ পাম্প করে থাকে অর্থাৎ হৃৎপিন্ডের নাড়ির গতি মিনিটি ৬০-৯০ বার। যদি কোন কারণে এই নাড়ির গতি হঠাৎ বেড়ে যায় তখন বুকে এক ধরনের অসাড়তার সৃষ্টি হয়। এই অসাড়তার অতিমাত্রার অনুভূতিই হৃদকম্পন।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্যালপিটেশনের রোগীদের কোনরকম রোগ শোক থাকে না। এই সব রোগী অতিমাত্রায় অনুভূতি প্রবণ হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন সময়ে সাধারণ উপসর্গ যেমন পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, অধিক ঘাম ইত্যাদি নিয়ে ডাক্তারের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ায়। এই ধরনের রোগী প্রায় সর্বদা দুশ্চিন্তাগস্ত হয়েথাকে। যেমন পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়, ব্যবসা-বাণিজ্য বা চাকরিতে  যদি কোন অসুবিধা দেখা দেয় ইত্যাদি। বিশেষ করে প্রবাসে দীর্ঘদিন স্বামীর অবস্থান জনিত ও স্ত্রীদের মাঝে এই উপসর্গ প্রায়ই দেখা যায়। প্রিয়জনের জন্য দীর্ঘ প্রতিক্ষায় প্রায়ই এই সব উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। এই সব রোগী কোন ছোটখাটো ঘটানায় নিজেকে সামলাতে না পেরে প্রায়ই ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। তাই সাধারণের ভাষায় এটাকে স্নায়ু ও  রক্ত সঞ্চালনের সূক্ষকায় (Neurocirculatory asthenia) বলা হয়।

কিছু কিছু ওষুধ সেবনের পরও রোগীর হৃদকম্পন দেখা দিতে পারে। যেমন হাঁপানির রোগী যদি দীর্ঘদিন ধরে সালবিউটামোল এমাইনোফাইলিন ইত্যাদি ওষুধ সেবন করে থাকে তাহলে প্রায়ই হৃদকম্পন দেখা দেয়। এই সব উপসর্গ অনেক সময় রোগীকে ওষুধের পার্শ্বক্রিয়া থেকে রক্ষা করে থাকে। অর্থাৎ হাঁপানী রোগীর হৃদকম্পন দেখা দিলে ওষুধের মাত্রা কমানো উচিত। তাই আজকাল ইনহেলার নেওয়ার জন্য রোগীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। মাদকাসতক্ত লোকেরা প্রায় সর্বদাই হৃদকম্পনের কথা বলে থাকে। বিশেষ করে যদিকিছু দিন এলকোহল বা অন্রান্য আসক্ত ওষুধ নেয়া বন্ধ থাকে তখন রোগীর সারা শরীরে কম্পন দেকা দেয়। এটাকে উইথড্রয়াল সিনড্রোম বলা হয়। অতিমাত্রায় এলকোহল পানে হার্টের মাংসপেশীও অনভূতি প্রবণ হয়ে ওঠে।এটা ছাড়াও চা কফি ইত্যাদি অতিমাত্রা সেবন করলেও হৃদকম্পন দেখা দিতে পারে।

যদি কোন কারণে রক্তে শর্করা বা গ্লুকোজ কমে যায় বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগী ওষুধ অথবা ইনসুলিন বেশি মাত্রায় নেয়ার পর কম খাবার খায় তবে প্রায়ই হৃদকম্পনের কথা বলে থাকে। অতিমাত্রায় জ্বর থাকলেও হার্টের নাড়ির অধিক গতির জন্য হৃদকম্পন হতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির টক্সিক প্রদাহ থাকলে হৃদকম্পন দেখা যায় । এই ধরনের রোগী খুব অস্থির থাকে এবং প্রায়ই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকে। হার্টের রোগী অর্থাৎ হার্টের রোগ, ভালভুলার রোগ বা হার্টের ইনফেকশন হলে প্রায়ই হৃদকম্পনের কথা বলা হয়ে থাকে।

হৃদকম্পনের রোগীকে পরীক্ষা করে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অধিক নাড়ির গতি ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না। ইলোকট্রোকাডিংওগ্রাম (ইসিজি) করে অধিক নাড়ির গতি ছাড়ও হার্টের অণ্যান্য রোগ সম্বন্ধেও ধারণা পাওয়া যায়। জ্বরের রোগীর অধিক তাপমাত্রা পাওয়া যায়। যদি থাইরয়েড গ্রন্থীর টঙ্কি প্রদাহ থাকে তখন রোগীর বড় বড় চক্ষু, অধিক ঘাম, হাতের সম্পন এবং শরীর দেখে এই রোগ চেনা খুব সহজ নয়।

তাই হৃদকম্পন দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এটাকে নিছক দুশ্চিন্তা ভাবা ঠিক নায়। অন্যদিকে অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তা করে অসুস্থতার ভান করে সহায় সম্পত্তি নষ্ট করে সর্বস্বান্ত যাতে না হতে হয় এজন্য সতর্কতার সাথে চলা উচিত।

স্নায়ু ও রক্তসঞ্চালনের সুক্ষতায় যারা ভুগে থাকেন তাদের বেলায় প্রোপানোলোল ১০-২০ গ্রাম ২-৩ বার দৈনিক সেবন করলে ২-৩ মাস পর উপকার পওয়া যায়। তবে এই ওষুধ হাঁপানী রোগীর বেলায় খুবই ক্ষতিকর। কাজেই হাঁপানীর রোগীরও হৃদপিন্ডের অকার্যকারিতা রোগ থাকলে এই ওষুধ সেবন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্য দুশ্চিন্তার ওষুধ যেমন নরজিন/ডিয়েনজিট দৈনিক ১-২টা কয়েক মাস সেবন করলেও ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে দীর্ঘ মেয়াদ এসব ওষুধ অনেক রকম পার্শ্বক্রিয়া করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ হার্ট অ্যাটাক কি এবং কাদের বেশি ঝুকি?

গণ সচেতনতায় ডিপিআরসি হসপিটাল লিমিটেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

twenty − 12 =