পৃথিবী মানুষের সাথে সাথেই চলছে। সৃষ্টির প্রথম দিকে মানুষ গাছপালা, লতাপাতা দিয়ে রোগের নিরাময় করতো। কিন্তু একেক সময় জটিল জটিল রোগের উদ্ভব এবং মানুষের গণ হারে মৃত্যুর জন্য মানুষ নতুনভাবে ভাবতে এবং নতুন নতুন রোগের ওষুধ আবিষ্কার শুরু করে। বর্তমানে এই ওষুধ যেমন মানুষের জীবন রক্ষা কের আবার ভুল ওষুধ মানুষের জীবন প্রদীপকে চিরদিনের জন্য নিভিয়ে দেয় আমরা ডিগ্রিধারী, পাস করা ডাক্তার চিকিৎসা করি রোগীর আদ্যপান্ত ভেবে কোন ওষুধ কতাটা কাজ করবে, এর কি পাশ্বপ্রতিক্রিয়া হবে সেটাও আমাদের মাথায় থাকে রোগীকে ব্যবস্থাপত্রে দেয়ার সময়।
কিন্তু আমদের দেশে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা ওষুধের দোকানগুলোতে যারা বসে থাকে তাদের হাতে প্রেসক্রিপশন গেলে অনেক সময় এরা ভুল ওষুধ দিয়ে রোগীর জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়। গত কিছুদিন আগে আমার একজন পরিচিত লোক বিশিষ্ট ডাক্তারের প্রেসপিক্রপশন মোতাবেক ওষুধ কিনতে যান, ওষুধের দোকানী তাকে ৫ এমজির জায়গার ৫০০ এমজির ওষুধ দিয়ে দেয়। যার ফলে রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। আবার ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে উনি দেখেন রোগীর ভুল ওষুধ খেয়ে লোকটির মৃত্যু হতে পারেতো বা অন্য কিছুও। এই দায়বার কে নেবে?
আমাদের দেশে এখানো দরিদ্রতার কারণে অনেকেই প্রেসক্রিপশনের টানা না যোগাতে পেরে এই সকল অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওষুধ ব্যবসায়ীদের কাছে যায়, যার আর এই সুযোটাই তারা নেয়। কোনরকম আগ-পিছ না ভেবেই ওষুধ দিয়ে দেয়। অথচ আমরা উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে দেখাবো সেখানে ডাক্তারেরর প্রেসক্রিপশন ছাড়া রোগীকে একটা প্যারাসিটামলও দেয়া হয় না। আমাদের দেশের মানুষ তো প্যারাসিটামল খায় মুড়ির মত। কিন্তু এর যে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে এই ব্যাপারে কারো কোন মাথা ব্যথাই নেই। আবার অনেক সময় দেখা যায়, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অনেক ওষূধ ব্যবসায়ী তাদের অবসর সময়গুলোতে নিজেদের ভাই বা অন্য কাউকে বসিয়ে রেখে যায়, যার ওষুধ সমপর্কে কোন ধারণাই নেই সে ক্ষেত্রে বিপদ ঘটে যায়। এই বিষয়গুলো আমাদের ভাববার সময় এসেছে।
এব্যাপারে কিছু পরামর্শ। নিম্নে দেওয়া হল:
প্রথমত: ওষুধ বিপণনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকদের নিয়োগ দেয়া।
দ্বিতীয়ত: ওষুধের দোকনগুলোতে অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত লোক বসানো রোধ করা।
তৃতীয়ত: ওষুধের নাম না বুঝলে ডাক্তারের কাছে মোবাইল বা ফোন করে ওষুধের নাম বুঝে নেয়ার ব্যবস্থা কারা।
চতুর্থত: ব্যাচলের ও বিশেজ্ঞ ডাক্তারদের, লেখাগুলো বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে লিখিত ওষুধগুলোর নাম যাতে নিদেনপক্ষে পাঠযোগ্য হয় এ ব্যাপারে ডাক্তারদের সহযোগিতা কামনা করা।
এক বিংশ শতাব্দীর এ পর্যায়ে এখনও আমাদের দেশে অনেকে মনে করে, যে ডাক্তারের লেখা যাত জটিল, তিনি তত বড় ডাক্তার। আমি এখনও বলতে শুনেছি প্রফেসর সাহেব ওষুধ লিখেছেন, আমাদের এমবিবিস ডাক্তার প্রেসক্রিপশন পড়তেই পারেননি। এসব অবস্থা উৎরে আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত, চিকিৎসায় পৃথিবীর শীর্ষ স্থানীয় দেশগুলোর পর্যায়ে চলে এসেছে, আর আমরা চিকিৎসা সেবা আকাঙ্খীরা অনেকেই বিদেশ পাড়ি দিয়ে হারাচ্ছি মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা। উপরোক্ত অনিয়মগুলো যত তাড়াতাড়ি শোধরাবে ততই মঙ্গল।
আরও পড়ুনঃ ২৫ লক্ষ শিশুকে খাওয়ানো হবে ‘এ’ প্লাস ভিটামিন।