
দাঁতের যত্নে এসব কথা কতটা সত্য?
‘রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফল খেলে দাঁত পরিষ্কার হয়’ কিংবা ‘সব মাউথ ওয়াশই একই কাজ করে’ ধরনের আরও অনেক কথা দাঁতের স্বাস্থ্য নিয়ে প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু দাঁত নিয়ে এসব কথার কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা তা নিয়ে বিভ্রান্তি অনেকেরই মাথাব্যাথার কারণ হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
দাঁতের যত্নে স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য প্রস্তুতকারী সুইডিশ প্রতিষ্ঠান তেপে’র গবেষকেরা এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখতে পেয়েছেন যে, অনেক মানুষের কাছেই দাঁতের যত্নআত্তির সাধারণ ধারণাগুলোও অস্পষ্ট। যুক্তরাজ্যের ফিমেলফার্স্ট ডটকম ওই জরিপে উঠে আসা কিছু বিষয় প্রকাশ করেছে।
প্রচলিত ধারণা: ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফল খেলে দাঁত পরিষ্কার হয়
আসলে যা ঘটে: ফল থেকে নিশ্চয়ই আমরা প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকি। কিন্তু অনেক ফলেই প্রচুর চিনি বা শর্করা জাতীয় উপাদান থাকে যা দাঁতের জন্য ভালো নয়। ফলের শর্করা ও অ্যাসিড দাঁতের গোড়ায় প্লাক বা ‘পাথর’ জমানোর জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে সাহায্য করে। তাই রাতে ফল খেতে হলেও অবশ্যই ঘুমাতে যাওয়ার আগে দাঁত মেজে নিতে হবে।
প্রচলিত ধারণা: একজনের টুথব্রাশ আরেকজন ব্যবহার করলে ক্ষতি নেই
আসলে যা ঘটে: সব সময় প্রত্যেকের আলাদা টুথব্রাশ ব্যবহার করা উচিত। কেননা আমাদের প্রত্যেকের মুখেই প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে। এগুলোর অনেকগুলোই প্রয়োজনীয় এবং অনেকগুলোই ক্ষতিকর। কিন্তু এগুলো যার যার শারীরিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত। দাঁত মাজার সময় ব্রাশে ব্যাকটেরিয়া লেগে যায় এবং সাধারণভাবে ধুয়ে ফেললেও তা যায় না। তাই একজনের ব্রাশ দিয়ে আরেকজন দাঁত মাজলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে।
প্রচলিত ধারণা: সব মাউথ ওয়াশই একই কাজ করে

Dental Equipment
আসলে যা ঘটে: নানা ধরনের টুথপেস্টের মতোই ভিন্ন ভিন্ন উপাদানে সমৃদ্ধ নানা ধরনের মাউথ ওয়াশ পাওয়া যায়। ফলে এগুলোর কার্যকারিতা ও উপকারিতাও ভিন্ন। সব মানুষের সব ধরনের মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা ঠিক না। যাদের মুখ বেশি শুষ্ক থাকে কিংবা যারা মুখের আলসারে ভুগছেন তাঁদের অ্যালকোহল সমৃদ্ধ মাউথ ওয়াশ এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রচলিত ধারণা: জোরে জোরে দাঁত মাজলে দাঁত ভালো পরিষ্কার হয়
আসলে যা ঘটে: দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যের জন্য একদিনে দুইবার দুই মিনিট করে দাঁত মাজাই যথেষ্ট বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আর জোরে জোরে দাঁত মাজলে মাড়ির গোড়ায় রক্তক্ষরণসহ দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। তাই নরম ব্রাশে খুব বেশি জোরে চাপ না দিয়েই দাঁত মাজা উচিত। আর স্বাভাবিক দাঁতের জন্য মাঝারি-নরম ধরনের ব্রাশ ব্যবহার করাই ভালো। তবে, দাঁত ও মাড়ির অবস্থা ভেদে চিকিত্সকেরা কাউকে কাউকে ভিন্ন ধরনের ব্রাশও ব্যবহার করতে বলতে পারেন। তাই দাঁত ও মাড়িতে কোনো সমস্যা বোধ করলে দাঁতের চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।