কোমর ব্যথার অপারেশনহীন চিকিৎসা

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

কোমর ব্যথা: কারণ, উপসর্গ এবং অপারেশনবিহীন চিকিৎসা

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৭ : ৫৫ অপরাহ্ন

জীবনের কোনো না কোনো সময়ে প্রত্যেকেই কোমর ব্যথায় ভুগেছেন। স্বল্পমেয়াদি ব্যথা এক মাসের কম সময় থাকে এবং দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক ব্যথা এক মাসের বেশি সময় স্থায়ী হয়ে থাকে। তবে ঠিক কোন কারণগুলোর জন্য এই ব্যথা হয়, সে বিষয়ে অনেকেই জানেন না। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে সেবা দিয়ে আসছে ঢাকা পেইন ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার (ডিপিআরসি)। রাজধানীর শ্যামলীতে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা ২০০৪ সালে। কোমর ব্যথার অপারেশনবিহীন চিকিৎসার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ডিপিআরসির বাত-ব্যাথা, প্যারালাইসিস ও রিহ্যাব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান।

কোমর ব্যথার কারণ

কোমর ব্যথার রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ইতিবাচক সাড়া মিললেও আধুনিক বিজ্ঞান কী বলছে এ চিকিৎসা নিয়ে, তা জানতে প্রশ্ন করা হয় ডিপিআরসি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের কাছে।

ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান বলেন, “কোমর ব্যথা একটা কমন সমস্যা। কোনো কারণে যদি কোমরের রগে চাপ লাগে। কারণ কোমরের ডামি বা আমাদের মাজার নিচে সেকরাম ও কক্সসিস আছে। দুই হাড়ের মাঝখানে ডিস্ক থাকে। এগুলো বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পড়েগিয়ে আঘাত পেয়ে বা হাড় ক্ষয়ের কারণেও অনেক সময় ফেটে বের হয়ে আসতে পারে। যখন ডিস্ক বের হয়ে আসে তখন আমাদের নার্ভ বা স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে। যখন নার্ভের ওপর চাপ পড়ে তখন কোমরে ব্যথা হতে পারে, পায়ে ব্যথা হতে পারে, পা অবশ লাগতে পারে, ঝিঁঝি হতে পারে অনেক সময় ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।”

ডা. মো. সফিউল্যাহ বলেন, “রোগীরা আমাদের কাছে পায়ের পাতার ঝিঁঝি নিয়ে আসে। তারা বলে কোমরে কোনো ব্যথা নেই। তখন এমআরআই বা বিভিন্ন ডায়াগনোসিস টুলস ব্যবহার করলে দেখা যায় কোমরের ডিস্ক প্রলাপ্স পাই। অনেক সময় ডিস্ক প্রলাপ্স ছাড়া আরেকটা সমস্যা হতে পারে। সেটা হলো হাড় সরে যাওয়া। একে আমরা ডাক্তারি ভাষায় স্পন্ডাইলোলিস্থেসিস বলে থাকি।”

তিনি জানান, অনেক সময় বিভিন্ন ক্যান্সার থেকে কোমরে ব্যথা হতে পারে। টিবি ইনফেকশন থেকে কোমর ব্যথা হতে পারে। পিএলআইডি কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ।

কোমর ব্যথার চিকিৎসার জন্য করণীয়

ডিপিআরসির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জানান, কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে যদি পায়ের পাতা ফুট ড্রপ হয়ে যায়, শক্তি কমে শুকিয়ে যায় সেটা রোগীর পেশা, বয়স, ওজন ও উচ্চতা পারিপার্শ্বিক হিসাব করে অনেককে সার্জারি করার পরামর্শ দিয়ে থাকি।

ডা. মো. সফিউল্যাহ বলেন, “৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ রোগী অপারেশনের ছাড়া সুস্থ হওয়া সম্ভব। সেই ক্ষেত্রে খুব স্বল্প সময়ে ডাক্তারদের কাছে আসতে হবে।”

তিনি বলেন, “১৫ থেকে ২০ দিন বা দুই থেকে তিন সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অ্যাডভান্স রিহ্যাব চিকিৎসা করতে হবে।”

ডিপিআরসির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জানান, সে ক্ষেত্রে ডিস্ক কম্প্রেশন থেরাপি, বিভিন্ন এক্সারসাইজ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, ইপিডুরাল থেরাপি, বিভিন্ন ম্যানুয়াল থেরাপির মাধ্যমে রোগীকে অপারেশনবিহীন সুস্থ করা সম্ভব।

কোমর ব্যথার প্রতিকার

কোমর ব্যথার কারণগুলোকে প্রিভেনশন করতে হবে। আসুন আমরা সচেতন হই কোমর ব্যথা হলেই বা সবক্ষেত্রেই অপারেশনের প্রয়োজন নেই। অপারেশনবিহীন অ্যাডভান্স চিকিৎসার মাধ্যমে কোমর ব্যথার অপারেশনের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

thirteen − seven =