উদ্বেগ রোগ বা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার (পর্ব – ২)

পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

উদ্বেগ রোগ বা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার আক্রান্ত একটি ছবি।

উদ্বেগ রোগ হচ্ছে মনের এক ধরনের অস্বাভাবিক অবস্থা। এ অবস্থায় উদ্বেগের মানসিক ও দৈহিক উপসর্গগুলো সর্বোচ্চ প্রাধান্য বিস্তার করে থাকে। ব্রেনের কোনো জৈবিক বা অন্য কোনো মানসিক রোগের কারণে উপসর্গগুলো সৃষ্ঠি হয় না।

উপসর্গগুলো এই প্রবন্ধে বিভিন্ন দৃষ্ঠিকোণ থেকে বিভিন্ন ভাবে বলা হয়েছে।এখানে গুছিয়ে উপস্থাপন করা হলো:

পরিপাকতন্ত্রে উপসর্গ

  • মুখ শুকিয়ে যাওয়া
  • গিলতে সমস্যা
  • পেটের উপরিভাগে অস্বস্তিবোধ
  • বেশি বেশি বাতাস বের হওয়া
  • প্রায় বাথরুমে ছোটা বা লুজ মোশন।

শ্বাসযন্ত্রে উপসর্গ

  •  শ্বাস নেয়ার সময় অসুবিধা, কষ্ঠবোধ।
  •  বুকে খিঁচে ধরা। চাপাবোধ করা।

হার্টে অসুখ

  • বুকে ধড়ফড় করা। হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া বা বুকে অস্বস্তিবোধ করা
  • হৃদস্পন্দন হারিয়ে যায় মাঝে মাঝে-এমন অতিরিক্ত সচেতনতা।

জেনিটোইউনারি উপসর্গ

  •  বারবার ব্যস্ততার সাথে প্রস্রাবের জন্য ছুটে যাওয়া।
  •  লিঙ্গের উত্থান ব্যর্থতা।
  •  মহিলাদেরও রিতুস্রাবে সমস্যা।

পেশির টানটান অবস্থাজনিত উপসর্গ

  •  হাত কাঁপা। কম্পমান অবস্থা।
  •  মাথাব্যথা
  •  পেশিতে ব্যাথা। ঘাড়ে, পিঠে, সর্বাঙ্গে ব্যথা।

শ্বাসজনিত উপসর্গ

  •  মাথা ঘোরানো। ঝিমঝিম করা।
  •  হাতে-পায়ে পিন ফুটানোর মতো টিংলিঙ সেনসেশন। টনটন করা। শিরশির করা।
  •  শ্বাস নিতে পারছি না এমন বোধ করা।

ঘুমের উপসর্গ

  •  ইনসোমনিয়া বা নিদ্রাহীনতা, অনিদ্রা
  •  ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন, ঘুমের ঘরে ভয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠা।

উপসর্গগুলো যেকোনো অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে দেখা দিতে পারে। প্রুিতট ডিসঅর্ডারের আবার আলাদা কিছু বৈশিষ্ঠ্যপূর্ণ উপসর্গও সাথে থাকে। সেই বৈশিষ্টগুলো উদ্বেগরোগ আলাদাভাবে চিহ্নিত করে। রোগগুলো আলাদা করতে ক্লিনিক্যাল প্রমাণ হাতে তুলে দেয় ওই বৈশিষ্ট্যমন্ডিত উপসর্গগুলো। ধাপে ধাপে বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে।

উদ্বেগ রোগ হচ্ছে লঘুতর মানসিক রোগ বা নিউরোসিস বা স্নায়বিকও রোগ। এই রোগে বাস্তাবতার সাথে রোগীর সম্পর্ক হারিয়ে যায় না। রোগী বোঝে তার রোগের কথা, চিকিৎসার প্রয়োজনের জন্য নিজেই এগিয়ে আসে।

পক্ষান্তরে বড় ধরনের মানসিক রোগে বা সাইকোসিস রোগী বাস্তবতার সাথে সম্পর্ক হারিয়ে ফেলে নিজে ভেঙ্গে, অন্যকে ভোগায়। নিজের রোগ হচ্ছে তা বোঝে না, চিকিৎসা করানোর কোনো প্রয়োজন মনে করে না।

কয়েকটি রোগ: অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার

  • সাধারণ উদ্বেগ রোগ বা জেনেরালাইজড অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার। এ ক্ষেত্রে উদ্বেগ সব সময় ব জায় থাকে। সার্বক্ষনিক ভয় ভয় টেনশন টেনশন মনের অবস্থা মাঝে মাঝে বেড়ে যেতে পারে। মাঝে মাঝে কমে আসতে পারে, একদম চলেও যায়।
  • ফোবিক অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার বা অহেতুক ভীতি রোগ। উদ্বেগ মাঝে মাঝে আসে। সব সময় থাকে না। বিশেষ অবস্থা বা প্রেক্ষাপটে উপসর্গের আক্রমন ঘটে । অযৌক্তিক ভয় তৈরি হয়। তখন রোগী ওই অবস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়। গুটিয়ে রাখে, আড়াল করে রাখে।
  • আতঙ্করোগ বা প্যানিক ডিসঅর্ডার। এ ক্ষেত্রেও অ্যাংজাইটি সব সময় থাকে না। একদম ভালো একজন মানুষ। আচমকা আতঙ্কের আক্রমণ ঘটে। দেহমনে জোয়ারের প্লাবনের মতো উপসর্গ ছড়িয়ে পড়ে আবার চলেও যায় উপসর্গগুলো। বিশেষ অবস্থা বা প্রেক্ষাপটের সাথে সাথে এ উপসর্গের সম্পর্ক নেই। যেকোনো অবস্থায় যেকোনো সময় এমনটি ঘটে যেতে পারে।
  • শুচিবায়ু রোগ বা অবসেশন কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার।
  • অ্যাকিউট স্ট্রেস ডিসঅর্ডার ।
  • পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার।

 বাকি অংশঃ-উদ্বেগ রোগ বা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার (পর্ব – ১)

গণ সচেতনতায় ডিপিআরসি হসপিটাল লিমিটেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

two × four =